প্রতিবাদ প্রাণীজগতের একটি সহজাত স্বাভাবিক প্রবৃত্তি।প্রতিবাদ বিষয়টা আপনা আপনি যেমন তৈরীহয় আবার নিজের স্বার্থের বিরুদ্ধে গেলেই যে কোন প্রাণী প্রতিবাদি হয়ে যায়।মানুষ যখনি বিবেকের বিপরীতে কাজ করে তখন সে তাকে দংশন করে থাকে।বিবেকের বিপরীত কাজ হলে মানুষ স্বাভাত প্রতিবাদ করে।এক এক দেশের প্রতিবাদ আবার এক এক রকম।অনেকে সহিংস প্রতিবাদ করে আবার অনেকে হিংসাত্মক প্রতিবাদ করে।
আফগানিস্তানে নারী শিক্ষা বন্ধ করা হলে বা নারীদের রেডিও স্টেশন বন্ধ করা হলে ঠিকই প্রতিবাদ করতে পারে কিন্তু নিজের দেশে নিজের বোন অপমানিত হলেও টু শব্দটি পর্যন্ত অনেকেই করে না।
ভারতীয় উপমহাদেশ সব সময় সকল বিষয়ে অনান্য মহাদেশের তুলনায় ভিন্ন।ভারতীয় উপমহাদেশ এমন একটা উপমহাদেশ যেখানে অসম্ভব বলে কিছু নেই।এই উপমহাদেশের একটি দেশ আবার বাংলাদেশ।এখানে ভারতীয় উপমহাদেশের সব অসম্ভবকে সম্ভব করা হয়।
ভারতের জনক মহাত্মা গান্ধী অহিংস প্রতিবাদের জনক হলেও,সারা বিশ্বের সবচেয়ে বেশী হিংসাত্মক কার্যকলাপ হয়ে থাকে এখানে।এদিক থেকে বাংলাদেশীরা আরো একধাপ এগিয়ে।নিজের স্বর্থহাছিল করার জন্য এরা সারা দেশটাকে নরক বানাতে পর্যন্ত এক সেকেন্ডো সময় নেয় না।এরা শেখ মুজিবকে পর্যন্ত হত্যা করতে দ্বিধাবোধ করেনি।এক যোগে ৬৩ জেলায় সিরিজ বোমা মেরেও এরা ক্ষান্ত হয়নি।সময় পেলেই এরা বারবার দেশের ক্ষতি করার জন্য সব সময় প্রস্তুত থাকে।
এরা যেমন সহিংস আন্দোলন করতে পারে আবার অহিংস আন্দোলন করতেও পিছিয়ে নেই।যদিও বাংলাদেশীরা ভালো মানের প্রতিবাদি সেটা হোক সহিংস বা অহিংস।
যদিও বাংলাদেশীরা ভালো প্রতিবাদী তথাপি এরা নিজের দেশের বিষয়গুলো নিয়ে প্রতিবাদ করতে সব সময় খুব ভয়ে থাকে।এরা সবচেয়ে বেশী প্রতিবাদী হয়ে থাকে ধর্মিয়বিষয় নিয়ে।ভালো মন্দ বিচার না করেই এরা ধর্মিয় বিষয়গুলো নিয়ে প্রতিবাদ করে,পক্ষান্তরে নেয্য বিষয় নিয়ে এরা কখনেই সবাই ঐক্যমতে পৌচ্ছাতে পারে না।
এরা নিজ দেশের ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে যতোটা না চিন্তা করে তার চেয়ে বেশী চিন্তা করে অন্য দেশের ঘটনাগুলো নিয়ে।এর প্রভাবেই এ দেশের মানুষগুলো অন্য দেশের ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে বেশী প্রতিবাদী হয়ে উঠে।এ প্রবণত শুধু দেশে মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়।নিজের পরিবারের মধ্যে কোন অন্যয় হলে সেখানে কেউই কোন প্রকার প্রতিবাদ করতে না পারলেও,অন্যের পরিবারে একই বিষয় নিয়ে কোন ঘটলে উঠে পরে লেগে যায়।বাংলাদেশীদের এমন নিরব থাকার অবশ্য অনেক কারন আছে।এ দেশে কোন বিষয়ে প্রতিবাদ করলে প্রতিবাদকারী অনেকের রোষানলে পরে।অনেক সময় প্রাপ্ত সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়।এই বঙ্গদেশে অনেক প্রতিবাদ কারিদের হত্যা পর্যন্ত করা হয়েছে।কথা বলা প্রতিবাদ করার স্বাধীনতা হরন করার জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়েছে।
এরকম জানা অজানা অনেক কারনে বাংলাদেশীরা নিজ দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রতিবাদ করা থেকে পিছিয়ে যায়।বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম রাজনৈতিক দল পর্যন্ত আন্দোলন প্রতিবাদ করা থেকে পিছিয়ে আছে।যার ফলে অন্য আর একটি রাজনৈতিক দল অবৈধভাবে টানা ১৫ বছর ক্ষমতা ধরে রাখলেও কিছু করতে পারছে না।কয়েক বার প্রতিরোধ গড়ে তুললেও তা আর স্থায়ী হয়নি।যখনি তারা তারা প্রতিবাদ করেছে তখনি কোন না কোন ছুতোয় তাদের দলীয় প্রধান সহ অনান্য নেতাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আমার এলাকার একটি ঘটনা বলি,এলাকায় সরকার দলীয় স্থানীয় নেতা,ক্ষমতার দরুন যিনি আবার স্থানীয় বনিক সমিতির নেতা।যিনি এলাকার বাজারের সরকারী খাসজমি টাকার বিনিময়ে একে ওকে দেয়া নেয়া করে।এটা দেখে সরকার দলীয় আর এক স্থানীয় নেতা(তিনি বনিক সমিতির নেতা নয়) ডিসি অফিসে তার নামে ফোনে অভিযোগ করে।তিনি যা অভিযোগ করেছিলেন,সেখানে তিনি বলেছিলেন স্থানীয় সরকার দলীয় নেতা জবরদখল করে সরকারী খাস জমি ভোগ করছেন।অভিযুক্তের নাম পরিচয় জানতে চাইলে,অভিযোগকারী জানায় যে,অভিযুক্ত আবার বনিক সমিতির সভাপতি।তখনি ডিসি অফিস থেকে অভিযোককারীকে অপমান করা হয়।আর বলাহয় আপনি বল্লেন সরকার দলীয় লোক,কিন্তু তিনি তিনি বনিক সমিতির সভাপতি।আপনার মতো মানুষের জন্য সরকারের বদনাম হয় বেশী।বেচারা অভিযোগকারী হতাশ হয়ে আর অভিযোগ না করার চিন্তা করে।ঘটনা এখানেই
শেষ নয়,অভিযোগকারী ফোন করার তিন ঘন্টার মধ্যেই এলাকায় তার অভিযোগের ফোন আলাপের অডিও ছড়িয়ে পরে।
আমি একটা ছেলেকে চিনি যে কিনা একটি কারখানায় কাজ করতো,কোন এক বিষয়ে সে শুধু মূখে বলেছিলো আন্দোলন করবে।পরের দিনেই তার চাকরি নাই।
এতো কিছুর পরেও বাংলাদেশীরা প্রতিবাদ বিমুখ নয়।মামলা হামলার ভয়ে দেশীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে প্রতিবাদ না করলেও অনান্য বিষয় নিয়ে সবসময় সবর থাকে।দেশের বিষয়ে প্রতিবাদ না করলেও এরা বিদেশের বিভিন্ন ইস্যুনিয়ে প্রতিবাদ করা থেকে বিরত থাকে না।
এদেশের প্রতিটি পদেপদে নারীরা অপমানের শিকার হলেও দুএকজন ছাড়া আর কারো প্রতিবাদ দেখা যায় না।কিন্তু আফগানিস্তানের নারীদের স্বাধীনতায় কোন কমতি হলে,দেশের প্রায় সবাই প্রতিবাদে মূখর হয়ে পরে।
আফগানিস্তানে নারী শিক্ষা বন্ধ করা হলে বা নারীদের রেডিও স্টেশন বন্ধ করা হলে ঠিকই প্রতিবাদ করতে পারে কিন্তু নিজের দেশে নিজের বোন অপমানিত হলেও টু শব্দটি পর্যন্ত অনেকেই করে না।
ভারত সরকার কিংবা ফ্রন্স সরকারকে বয়কট করতে চাইলেও।নিজ দেশের অবৈধ সরকারকে বয়কট করার কথা বলতেই ভয় পায়।
জীবনে আড়ৎ এর একটিও পণ্য না কেনার পরও আড়ৎ কে বয়কট করতে পারে।সামান্য কারনে এরাই আবার কোটি মানুষের আস্থা ও রুজির প্রতিষ্ঠান প্রাণ-আরএফএল গ্রুপকে ঠিকই বয়কট করতে পারে।কিন্তু তারা ভেজালের বিরুদ্ধে কোন শব্দেই করে না।
এর পরেও আশার কথা এই যে বাংলাদেশীরা প্রতিবাদ করা ভূলে যায়নি।দেশের বিষয়ে না হলেও বিদেশের বিষয়গুলোতে প্রতিবাদ করার কারনে প্রতিবাদের চর্চাটা এখনো এ দেশে টিকে আছে,এটাই অনেক বড় বিষয়।
এই মন্তব্যটি লেখক দ্বারা সরানো হয়েছে।
উত্তরমুছুনভালো
উত্তরমুছুন