নির্বাচনঃস্মার্ট দেশের এনালগ পদ্ধতি

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী,শেখ মুজিবের কন্যা বাংলাদেশের সেরা সফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে বাংলাদেশ এখন পুরোদমে ডিজিটাল বাংলাদশে রুপান্তরিত হয়েছে।ডিজিটাল বাংলাদেশের রুপকার শেখ হাসিনা এবার বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন।দেশের এমন কোন খাত নেই যেখানে ডিজিটালাইজেশনের ছোয়া লাগেনি।এমনকি দেশের এমন কোন শ্রেণী পেশার মানুষ খুজে পাওয়া যাবে না,যারা ডিজিটালাইজেশনের সুবিধা ভোগ করছে না।কোনো রাষ্ট্র রাতারাতি উন্নতির শীর্ষে আহরণ করতে পারেনা।সকল পরিবর্তন উন্নয়ন ধারাবাহিক প্রক্রিয়া।সেই ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার পর থেকে আজকের স্মার্ট বাংলাদেশ উন্নয়নের ধারাবাহিক প্রক্রিয়া।যেখানে বাংলাদেশের সমস্ত বিষয়কে


  ডিজিটালাইজেশন করা হয়েছে,সেখানে বাংলাদেশ নির্বাচন কেন বাদ যাবে?সে লক্ষ্যে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনকে ডিজিটালাইজেশনের আওতায় আনা হয়েছে।নির্বাচন ব্যবস্থায় পরিবর্তন এনে গোপন ব্যালট পেপারের পরিবর্তে পরিবর্তন এনে ইভিএম এ নির্বাচন গ্রহণের উদ্যোগ গ্রহণ করে করা হয়েছে।এ জন্য বিভিন্ন স্থানীয় নির্বাচনে ইভিএম এ পরীক্ষামুলক ভাবে ভোট গ্রহণ করা হয়।যদিও ইভিএম নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে।অনেকে ইভিএম নিয়ে প্রশ্ন তুললেও সেটা আমার কাছে স্বাভাবিক মনে হয়েছে।সব কিছু পরিবর্তনের পক্ষে ও বিপক্ষে এই দুটা পক্ষ থাকে।বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আবার এই দুই পক্ষ সবসময় সোচ্চার।ভালো হোক আর খারাপ হোক একটা প ক্ষ সেটা সমর্থন করবে আর একটা পক্ষ তার বিরোধিতা করবে।তবে ইভিএম নিয়ে কমন একটা অভিযোগ হচ্ছে এর ধীরগতি।আর এ ধীরগতির অন্যতম কারন হচ্ছে,নতুন পদ্ধতি হওয়ায় এ দেশের সাধারন মানুষ এর সঠিক ব্যাবহার সম্পর্কে জানে না।আর একটা কারন হচ্ছে হাতের ছাপ দ্রুত না নেয়া।এ সমস্যা সামাধানে নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন সময় ক্যাম্প করলেও তা অপ্রতুল।আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যাবহার করার আগে,ইভিএম ব্যবহার করার জন্য দেশের মানুষের মধ্যে এটির ব্যাবহার পদ্ধতি সম্পর্কে জানার জন্যে আরো বেশী বেশী ক্যাম্প করা প্রয়োজন।তা না হলে জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যাবহার করা হবে বোকামি,এতে জাতীয় নির্বাচনে হযবরল অবস্থা হবে।

আগামী জাতীয় নির্বাচনের আর সাত মাসেরও কম সময় আছে।এমন সময় গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।যা জাতীয় নির্বাচনের আগে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন ছিল।এ নির্বাচনকে নির্বাচন কমিশনও চ্যালেন্স হিসেবে গ্রহণ করে।গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন এখন পর্যন্ত  এক মাত্র নির্বাচন যেখানে সকল কেন্দ্রে ইভিএমএ ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ হয়।এছাড়াও বাড়তি নিরাপত্তা হিসেবে সকল কেন্দ্র ও বুথে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়।

কর্মসূত্রে কয়েক বছর ধরে গাজীপুরে অবস্থান করলেও গাজীপুরের রাজনীতি নিয়ে তেমন কোন খবরা খবর রাখা হয় না,কর্ম ব্যাস্ততার কারনে।নির্বাচনের দিন সাধারন ছুটি থাকায়,গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে পর্যবক্ষণে বসে পরি।সারা দিন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে দেখলাম নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে।কিন্তু ইভিএম ছাড়াও আরও কিছু বিষয় নিয়ে কিছুটা প্রশ্ন থেকেই যায়।আমার কাছে নির্বাচন ব্যাবস্থা হতে হবে দ্রুত।এখানে নির্বাচকমণ্ডলীদের ঘন্টার পর ঘন্টা রোদ বৃষ্টিতে লাইনে দাড়িয়ে রাখার কোন যৌক্তিকতাই নেই।সেখানে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নির্বাচকমণ্ডলীদের অনেকে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত লাইনে দাড়িয়ে থেকে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে হয়েছে।নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে দেখলাম ৪০ নং ওর্য়াডের এক কাউন্সিলর প্রার্থীর প্রার্থীতাই বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন।তার বিরুদ্ধে নির্বাচকমণ্ডলীদের ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ ছিল।এমন সাহসী পদক্ষেপ নেয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে।ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরপরেই নির্বাচন কমিশন জানায় গাজীপুর সিটি নির্বাচনে মাত্র ৫০ শতাংশ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।অনেকের কাছে এ সংখ্যাটা অনেকের কাছে খুব কম মনে হলেও,আমার কাছে এই পরিসংখ্যানটা খুব স্বাভাবিক মনে হয়েছে।আপনারা জানেন,গাজীপুর শিল্প কারখানা অধ্যুষিত একটি অঞ্চল।এ কারনে এখানে শ্রমিকদের সংখ্যাই বেশী।আবার স্থানীয় ভোটাটদের চেয়ে এখানে বহিরাগত শ্রমিক ভোটারের সংখ্যা বেশী।অনেকে চাকরি সূত্রে অন্যত্র চলেগেছে,অনেকে আবার চাকরি ছেড়ে গ্রামের বাড়ী গেছে,আবার অনেকে গাজীপুরে থেকেও বিভিন্ন কারনে নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগকরা থেকে বিরত ছিলেন।এসব বিষয় বিবেচনা করেই ৫০ শতাংশ ভোটার যে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে তাদের ভোটাধিকার প্রদান করছেন,তা নির্বাচন কমিশনের সফলতার পর্যায়েই পরে।



তবে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন পর্যবেক্ষনে আমার কাছে কয়েকটি বিষয় দৃষ্টিকটু মনে হয়েছে,তার মধ্যে একটি হলো ভোট গণনা ও ফলাফল প্রকাশ।নির্বাচন ব্যাবস্থায় ডিজিটালাইজেশন করার জন্য ইভিএম এর ব্যবহার করা হচ্ছে ঠিকই কিন্তু সেখানে ভোট গণনা ও ফলাফল প্রকাশের জন্য সেই মান্ধতার আমলের পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে!যেখানে বিরতিহীন ভাবে সকাল আটটা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত ৪৮০ কেন্দ্রে আট ঘন্টায় ইভিএম এর মাধ্যমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠান সম্পুর্ন হয়েছে।সেখানে রাত দশটা পর্যন্ত রির্টানিং কর্মকর্তা মাত্র ১৩৩ কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা করতে পেরেছে!যেখানে ৮ ঘন্টায় ৪৮০ কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ শেষ করতে পেরেছে নির্বাচন কমিশন।সেখানে ছয় ঘন্টায় ১৩৩ কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণার যৌক্তিকতা কি!ইভিএম এ ভোট হওয়ায় আমার কাছে মনে হয়েছিলো ভোট গণনাও খুব কম সময়ের মধ্যেই হওয়ার কথা।সেখানে এতো সময় কেন লাগবে?নাকি ভোট গণনায় ডিজিটালাইজেশনের কোন ছোয়াই লাগেনি!

1 মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
নবীনতর পূর্বতন