এলোমেলো ভাবনা

ছোট্টথেকে কোটি কোটি স্বপ্ন নিয়ে বেড়েওঠা।কোন কোন স্বপ্নের ধারের কাছে যেতে না পারলেও,যে সব স্বপ্ন বাস্তবকরা সম্ভব সে সবেও পূরণকরা হয়েওঠে না।এমনকি সে স্বপ্নগুলো আর স্বপ্নেই থাকেনা।বয়স বাড়ার সাথে সাথে স্বপ্নগুলো যেমন বাড়তে থাকে তেমনি পরিবর্তন হতে থাকে।বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক কারনে আগের স্বপ্নগুলোকে আর স্বপ্নেই মনেহয়না।এমনি হাজার হাজার স্বপ্ন ধরা হলেও অধরাই থেকে যায়।তবুও মানুষের স্বপ্ন দেখা থেমে থাকে না।স্বপ্ন আছে বলেই তার আশায় মানুষ বাচেঁ।



যখন থেকে বাংলাদেশ সম্পর্কে বুঝতে শিখেছি,ঠিক তখন থেকেই,সাভারে অবস্থিত জাতীয় স্মৃতিসৌধ দেখার স্বপ্নছিল সবার উপরে।কিন্তু সে স্বপ্ন আর স্বপ্ন নাই।স্মৃতিসৌধের কাছাকাছি থাকলেও খুবএকটা যাওয়াহয় না।দায়িত্বেরভাড়েই হোক বা অলসতার কারনেই হোক।আগের স্বপ্নগুলোর মূল্য এখন নিজের কাছেই নাই।সে স্বপ্ন আজ ফিকে হ'য়ে গেছ।

ছোটবেলায় স্বপ্ন দেখতাম কোন একদিন হলেও ফেব্রুয়ারী মাসে বাংলাদেশের বই মেলা দেখতে যাবো।কোন একদিন এ বই মেলায় আমার নিজের লেখা বই প্রকাশ হবে।কয়েক বছর ধরে বই মেলার আশে পাশে থাকলেও একবারের জন্যে হলেও সেই স্বপ্নের বই মেলা আর যাওয়া হয়নি!

২১ শে ফেব্রুয়ারী ২৬ শে মার্চ আসলেই নিজেই,বাশেঁর কঞ্চি দিয়ে শহীদমিনার-স্মৃতিসৌধ বানিয়ে তাতে ফুল দিয়ে দিবসগুলো পালন করতাম।যখন সপ্তম শ্রেণীতে পড়ি তখন কার কথা,আমাদের ইউনিয়ন থেকে ২১ শে ফেব্রুয়ারী পালন করার পরিকল্পনা করা হয়।যেখানে ছেলে-মেয়েদের জন্য বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন ছিলো।সেখানে আমি অংশগ্রহণ করে পুরস্কারও পেয়েছিলাম।তবে বিষয়টি খুব খারাপ লেগেছিলো যখন দেখলাম,একটা ইউনিয়ন হয়ে-ও বাশেঁর তৈরি অস্থায়ী শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শহীদের প্রতি সম্মন জানানো হয়েছে।আমার কাছে মনে এতে শহীদের প্রতি সম্মান দেখানোর চাইতে অপমানিতই করা হয়েছে বেশী।সেদিন থেকেই স্বপ্ন দেখতাম আমার এলাকায় একটি স্থায়ী শহীদমিনার তৈরি করবো।ঠিক তার কয়েক বছর পর অনেকের হাতে পায়ে ধরে হলেও অবশেষে শহীদমিনারটি তৌরি করে ফেলেছিলাম।কিন্তু এলাকার কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষের জন্য সেটা আর স্থায়ী হয়ে ওঠেনি।তবে এটা ভেবে খুশি হই,যখন দেখি আমার দেখানো পথে এলাকার কিছু ছোট ছোট ছেলেরা আমার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে,ঐ একই স্থানে ইয়াবড় একটা শহীদমিনার বানিয়েছে।সারা বছর সেখানে বিভিন্ন অনুষ্ঠান হয়।এর চাইতে আর বেশী সুখের কি আছে।

আগে খুব স্বপ্ন দেখতাম ক্রিড়াসংগঠক হবো।নিজের একটা ক্লাব থাকবে,যার নিজস্ব একটা মাঠ থাকবে।দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিভন্ন ইভেন্টে যে ক্লাব অংশগ্রহণ করবে।কিন্তু এখন তার কিছুই করা হয়নি।

নিজের একটা প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান থাকবে যেখানথেকে আমার মতো ছোট-খাটো লেখিয়েদের তুলে আনার চেষ্টা করাহবে।একটা রাত্রিকালীন স্কুল কলেজ করার স্বপ্নও দেখেছিলাম।যেখানে আমার মতো সুবিধাবঞ্চিত ছেলেমেয়েরা একটু হলেও লেখা-পড়ার সুযোগটা পায়।বয়স্কদের শিক্ষার জন্য কাজ করার পরিকল্পনা ছিলো।যদিও একটা প্রতিষ্ঠান করেছিলাম।কিছুদিন ভালোই চলছিলো।কয়েকজন সেখান থেকে শিক্ষাও নিয়েছে।কিন্তু এলাকার লোকজনের অসহযোগিতায় তা আর বাস্তবায়ন হয়নি।

স্বপ্ন দেখতাম একটা তরুণ ও একটা প্রবীন সংগঠন থাকবে।যা তরুণদের একজন আদর্শ ভালো মানুষ হিসেবে গড়েতোলার সহয়তায় কাজকরবে।আর বয়স্কদের জন্য থাকবে প্রবীণ সংঘ।যেখানে পরিবারের বোঝা হয়ে থাকা মানুষজন সহ সকল প্রবীণরা মান সম্মত পরিবেশের মাঝে হাসি-খুশির মধ্যদিয়ে বাকি জীবনটা কাটিয়ে দিতে পারে।সবার জন্য একটা পাঠাগার করারও পরিকল্পনা ছিলো।যেখানে পৃথিবীর সকল বই ছাড়াও সকল সংবাদপত্র থাকবে।এখানে সবাই বিনামূল্যে সকল বই ও সংবাদপত্রগুলো পড়তে পারবে।



সে সময় অনেক জ্ঞানীগুণী মানুষের জীবনী ও তাদের অবদানের কথা জানার পর,
নিজেরো এই পৃথিবীতে কোন আবদান রেখে যাওয়ার স্বপ্নছিল।কিন্তু তখন কোন কিছুই মাথায় আসছিলো না।প্রয়োজন ছাড়া কোনকিছু  কেউ তৈরী করতে পারেনা।সে সময় আমাদের বাড়ীতে বিদুৎ ছিলো না।বিদুৎ সংযোগ নিতে সে সময় অনেক টাকার তারের দরকার ছিল যা আমাদের ছিলো না।তখন থেকেই চিন্তাকরেছি ইশ!যদি বিনাতারে বিদুৎ নেয়া যেতো,তাহলে আমার মতো অনেক মানুষের কতোনা ভালো হতো।সে সময় বিনা তারে বিদূৎএর কথা বলতে যেয়ে বন্ধু-বান্ধব এমন কি শিক্ষকদের থেকেও বারবার অপমানিত হয়েছি।সে সময় চিন্তা করেছিলাম রেডিও টিভিতে যখন বিনা তারে কথা বলা শুনা ও ছবি দেখা যায় তাহলে বিনা তারে বিদুৎ সঞ্চালন করাও যাবে।এ নিয়ে তখন থেকেই অনেক ঘাটাঘাটি করছি।কিন্তু আজও সফলতার মুখ দেখতে পারিনি।

নিজের চিন্তাধারা গবেষনা করার জন্য,নিজস্ব একটা গবেষণার থাকবে।যেখানে আমি ছাড়া আর কারোই প্রবেশাধিকার থাকবে না।কারন অনেক বিজ্ঞানীদের গবেষণাপত্র চুরি হয়েছিলো।এর ফলে অনেকেই তাদের আবিস্কারের মূল্যায়ন পায়নি।যদিও সে জন্য বাড়ীতে একটা আলাদা ঘর বানিয়েছি,তবে এর কাজ আজও শেষ করতে পারিনি।

মাঝে মাঝে স্বপ্ন দেখতাম নিজের একটা বাহিনী থাকবে।যার প্রতিটা সদস্যেই আমার কথামত কাজ করবে।যেখানে অন্যায় অবিচার হবে সেখানেই আমার বাহিনী ঝাপিয়ে পড়বে।দরকার হলে বিভিন্ন দেশের হয়েও আমার বাহিনী নিঃস্বার্থভাবে কাজকরে যাবে।পাশাপাশি আমার চাওয়া-পাওয়া পূরুন করবে।এমন কি শত্রুদের ধ্বংসকরার কজে এ বাহিনী কাজ করবে।

বাংলাদেশের রাজনৈতির যে হযবরল অবস্থা।সরকার ব্যবস্থাও নোংরা।একসময় স্বপ্ন দেখতাম এদেশে একটি আদর্শ রাজনৈতিক দল গঠন করবো।সে রাজনৈতিকদল কোন একদিন সরকার গঠন করবে।সে সরকার হবে পৃথিবীর অন্যতম সরকার।আর সরকার প্রাধাণ আমি নই অন্য কেউ হবে।

আপনার মূল্যবান মতামত প্রদান করুন

إرسال تعليق (0)
أحدث أقدم