কেন এই পরিবর্তন?
২০০৪ সালেই এই আইন জারি হয়েছিল, তবে এতদিন তা কার্যত প্রয়োগ করা হচ্ছিল না। মানুষজন বণ্টননামা ছাড়াই খাজনা দিতেন, জমি ব্যবহার করতেন, এমনকি বিক্রি করতেন। এই অবস্থার অবসান ঘটাতে ২০২৫ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি সরকার নতুন করে একটি পরিপত্র জারি করে নির্দেশনা দিয়েছে — এখন থেকে বণ্টননামা দলিল ছাড়া কোনো উত্তরাধিকারী তার অংশের জমি আলাদাভাবে ব্যবহারের সুযোগ পাবেন না।
কি আছে ইসলামী ও হিন্দু উত্তরাধিকার আইনে?
ইসলামী শরিয়াহ অনুযায়ী (সূরা নিসা অনুসারে):
- কন্যা: ১/২ (একজন) বা ২/৩ (দুই বা ততোধিক)
- স্ত্রী: ১/৮ (সন্তান থাকলে), ১/৪ (সন্তান না থাকলে)
- পিতা-মাতা: প্রত্যেকে ১/৬
- পুত্র: দ্বিগুণ (কন্যার তুলনায়)
হিন্দু উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী মৃতক্ষর বা দায়ভাগ ভিত্তিতে বণ্টন হয়, যেখানে পুত্র ও কন্যা উভয়ের সমান অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে সাম্প্রতিক আইনি সংস্কার অনুযায়ী (ভারতে প্রযোজ্য)।
তবে ধর্মীয় আইন অনুযায়ী ‘হিস্যা’ (অংশ) ঠিক থাকলেও, কোন জমির কোন অংশটি কে ভোগ করবেন, সেটি নির্ধারণ করতে এখন বাধ্যতামূলকভাবে রেজিস্ট্রিকৃত বণ্টননামা দলিল প্রয়োজন।
মূল পয়েন্টগুলো:
- উত্তরাধিকার সম্পত্তি এখন এককভাবে ব্যবহারযোগ্য নয় বণ্টননামা ছাড়া।
- ২০০৪ সালের আইন অনুযায়ী বণ্টননামা প্রয়োজন ছিল, কিন্তু ২০২৫ সালের নতুন নির্দেশনায় তা কার্যকরভাবে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
- মৌখিক বণ্টন এখন আর গ্রহণযোগ্য নয়।
- খাজনা, নামজারি, বিক্রি — সব কিছু করতে হলে রেজিস্ট্রিকৃত বণ্টননামা লাগবে।
- ধর্মীয় ‘হিস্যা’ থাকবে অপরিবর্তিত, তবে কোন জমির অংশ আপনি ব্যবহার করবেন, তা নির্ধারণ করতে হবে সম্মিলিতভাবে।
উত্তরাধিকার আইনে ধর্মীয় হিস্যা পরিবর্তন হয়নি, তবে তার বাস্তবায়নের পদ্ধতিতে এসেছে বড় পরিবর্তন। এখন পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে বসে রেজিস্ট্রিকৃত বণ্টননামা করতে হবে। এটি পরিবারে শান্তি রক্ষা করবে, জমি নিয়ে বিভ্রান্তি ও বিরোধ কমাবে।