গত ৩০.সে মে জিপিএ ৫ পাওয়া ছাত্র- ছাত্রীদের সাক্ষাৎকার বিষয়ে, দু কলম লিখতে চাইছিলাম। কয়েকদিন বাদে আজ লিখছি তার আগে সেদিনের কিছু স্মৃতি তুলে ধরতে চাই।
সেদিন আমার অনার্স ৪র্থ বর্ষের পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষার কক্ষটা হলরুম হওয়ায়, অনেক ছাত্র-ছাত্রী পরীক্ষা দিচ্ছি। সে কারনেই দু'জন শিক্ষকের পরিবর্তে তিনজন শিক্ষক আমাদের পরীক্ষার সামগ্রীক দেখভাল করেন। সেদিন অবশ্য দু'জন শিক্ষক ও একজন শিক্ষিকা আমাদের দায়িত্বে ছিলেন। বিকেলে পরীক্ষা হওয়ায়, ঠিক দুপুর ২ টার সময় প্রশ্ন বুঝেপাই। যার যেটা কমন আছে সেটা সবাই লিখছি, এর ফাকেই স্যারেরা এসে খাতায় স্বাক্ষর করে গেছেন। স্বাক্ষর করা শেষ হওয়ায় শিক্ষক দুজন বসে গল্প করছেন! মোবাইলে কি যেন দেখছেন আর হাসছেন, যা আমাদের বিরক্তির কারন হলো। সে সময় শিক্ষিকা একাই আমাদের সামাল দিচ্ছেন। সে টা দেখেই বন্ধুদের বলছি "দেখ ব্যাটারা শশুড়ের বাড়ী এসে গল্প কারছে, আর ম্যাডাম একাই ডিউটি দিচ্ছেন "।
একটু পরেই ম্যাডাম একজন বন্ধুর নকল ধরে ফেল্লো! যে কিনা প্রশ্নের উপর লিখেনিয়ে এসেছে! ততোক্ষনেই স্যারদের মোবাইল দেখা শেষ, তবুও বসে আছে। ম্যাডাম তাঁর খাতাটা নিয়ে একজন শিক্ষকের হাতে দিলেন। এর একটু পর ম্যাডাম বাইরে যাচ্ছিলেন, সে সময় বন্ধুটি ম্যাডামের কাছে খাতাটা চাইলো? তখন ম্যাডাম একজন স্যারকে দিখিয়ে বল্লেন স্যার দিতে চাইলে দিতে পারেন। কিছুক্ষন পর বন্ধুটি খাতা নেয়ায় জন্য স্যারের কাছে গেল। স্যার কিছু উত্তম- মাধ্যম লাগি দিয়ে বেড়হয়ে যেতে নিদের্শ দিলেন। কিন্তু সে ছাড়বেই না। আরও কিছুক্ষন দাড়ীয়ে থাকলো। স্যারের মেজাজ এবার গরম হয়ে গেল জোড়ে জোড়ে কথা বলতে থাকলো। যা আমাদের অসহ্য লাগছিল। তবুও বন্ধুটি চলে গেল না। বাধ্য হয়ে স্যার তাকে খাতাটা ফিরত দিয়ে দিলেন! এই শর্তে যে তাকে চেয়ার টেবিলে বসে পরীক্ষা দিতে হবে (স্যাররা যেখানে বসে ছিলেন) । শর্তে রাজিহয়ে বন্ধুটি লেখা শুরু করেদিলো। আর স্যার হাটতে হাটতে আমাট কাছে এসে বল্লো, এরকম নাছোড়বান্দা ছেলে দেখিনি রে বাবা। বাধ্যহয়ে খাতাটা দিয়ে দিতেহলো। কোন কোন বন্ধু বলে উঠলো।ভালই করেছেন স্যার, আজ ওর শেষ পরীক্ষা ছিল, কেউ আবার একটু বাড়িয়ে বল্লো ক্ষমা একটা মহৎ গুণ স্যার!
পরীক্ষা শেষ করে বাড়ী এসে ফেসবুকে দেখলাম, সবাই এ+ ছাত্র-ছাত্রীদের ধুয়ে দিচ্ছে, সেটা নিয়ে সোরগোল পরেগেছে। বিস্তারিত জানতে ঘাটাঘাটি শুরুকরে দিলাম। বেশী সময় লাগলো না সেই ভিডিও টা খুজে পেলাম। ভিডিওটিতে যা দেখলাম তা অবাক করার মতো ঘটনা। বুঝার জন্য কয়েকটি প্রশ্ন ও উত্তর উল্লেখ করার প্রয়োজন বোধ করছি।
প্রথম প্রশ্ন ছিল,©জি পি এ এর পূর্নরুপ কি?
কারও উত্তর জানিনা!
কারও আবার গ্রেটিং পয়েন্ট।
©এস এস সি এর পূর্নরুপ কি হবে?
এখন আমার মনে পরছে না! কারও আবার স্কুল সেকেন্ডারি সার্টিফিকেট, কারও জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট!
© আমি জি পি এ ৫ পেয়েছি ইংরেজিতে কি হবে?
একজন পারি না! একজন বলে আই এম জি পি এ 5! আই গিপ এ জি পি এ 5! আই গেট জি পি এ 5! আই..... পারতেছিনা!
© শহীদ মিনার কোথায়?
স্যরি জানিনা!
© অপারেশন সার্চ লাইট কি?
জানি না! অবাক করা উত্তর হলো, অপারেশন করার সময় যে লাইট জ্বালানো হয় সেটাই অপারেশন সার্চলাইট!
© শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস কবে?
জানি না,
কারও উত্তর ১৭ ই আগস্ট!কেউ বা ১০ ডিসেম্বর!
© আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস কবে?
জানি না!
©স্বাধীনতা দিবস কত তারিখে?
১৬ ই ডিসেম্বর!
© বিজয় দিবস কবে?
বিজয় দিবস হচ্ছে ২৬ সে ডিসেম্বর!
জাতীয় স্মৃতিসৌধ কোথায়?
এটা পারি না!
© রণ সংগীত কে রচনা করেছেন?
পারিনা, কারও উত্তর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর!
© বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের রচিয়তা কে?
কাজী নজরুল ইসলাম!
©মাউন্ট এভারেস্ট কোথায়?
ইংল্যান্ডে!
© তুমি সাইন্সে পরেছো পীথাগোরাস কে?
ঔপন্যাসিক!
এ রকম আনেক প্রশ্ন, যেমন, বাংলাদেশের বর্তমান রাষ্ট্রপতির নাম কি বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের সময় কয়টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছিল? নেপালের রাজধানীর নাম কি? কেউ ই এ সবের উত্তর দিতে পারে নি!
উপরোক্ত সাক্ষাতকারটি একটি বে সরকারি টেলিভিশনে প্রচার করে, যার রিপোর্টার ছিলেন, আনোয়ার হোসেন।
সাক্ষাতকারের পর বিভিন্ন শিক্ষাবীদের সাথে এনিয়ে কথা বলেন।
প্রথম প্রশ্ন ছিল,©জি পি এ এর পূর্নরুপ কি?
কারও উত্তর জানিনা!
কারও আবার গ্রেটিং পয়েন্ট।
©এস এস সি এর পূর্নরুপ কি হবে?
এখন আমার মনে পরছে না! কারও আবার স্কুল সেকেন্ডারি সার্টিফিকেট, কারও জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট!
© আমি জি পি এ ৫ পেয়েছি ইংরেজিতে কি হবে?
একজন পারি না! একজন বলে আই এম জি পি এ 5! আই গিপ এ জি পি এ 5! আই গেট জি পি এ 5! আই..... পারতেছিনা!
© শহীদ মিনার কোথায়?
স্যরি জানিনা!
© অপারেশন সার্চ লাইট কি?
জানি না! অবাক করা উত্তর হলো, অপারেশন করার সময় যে লাইট জ্বালানো হয় সেটাই অপারেশন সার্চলাইট!
© শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস কবে?
জানি না,
কারও উত্তর ১৭ ই আগস্ট!কেউ বা ১০ ডিসেম্বর!
© আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস কবে?
জানি না!
©স্বাধীনতা দিবস কত তারিখে?
১৬ ই ডিসেম্বর!
© বিজয় দিবস কবে?
বিজয় দিবস হচ্ছে ২৬ সে ডিসেম্বর!
জাতীয় স্মৃতিসৌধ কোথায়?
এটা পারি না!
© রণ সংগীত কে রচনা করেছেন?
পারিনা, কারও উত্তর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর!
© বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের রচিয়তা কে?
কাজী নজরুল ইসলাম!
©মাউন্ট এভারেস্ট কোথায়?
ইংল্যান্ডে!
© তুমি সাইন্সে পরেছো পীথাগোরাস কে?
ঔপন্যাসিক!
এ রকম আনেক প্রশ্ন, যেমন, বাংলাদেশের বর্তমান রাষ্ট্রপতির নাম কি বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের সময় কয়টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছিল? নেপালের রাজধানীর নাম কি? কেউ ই এ সবের উত্তর দিতে পারে নি!
উপরোক্ত সাক্ষাতকারটি একটি বে সরকারি টেলিভিশনে প্রচার করে, যার রিপোর্টার ছিলেন, আনোয়ার হোসেন।
সাক্ষাতকারের পর বিভিন্ন শিক্ষাবীদের সাথে এনিয়ে কথা বলেন।
আমার প্রতিক্রিয়াঃ
প্রথমত ভিডিও টি দেখে চরম হতাশ হয়েছি। আমাদের বর্তমান প্রজন্ম, এসব কমন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে না! আমি সহ প্রায় সবাই এ নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছে।
দ্বিতীয়ত ভিডিও টা যখন প্রথমবার দেখলাম তখন সবকিছুই স্বাভাবিক মনে হয়েছিল। কিন্তু যখন দ্বিতীয়, তৃতীয় এভাবে কয়েকবার দেখলাম, তখন কতোগুলো প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েগেলাম!
আপনারা যারা টেলিভিশনে সাক্ষাতকার দেন, তারা তো জানেন সাক্ষাতকার নেয়ার সময় কতবার প্রাক্টিস করতেহয়। এমনও হয় বারবার ট্রাই করার পরও সাক্ষাতকার ভালভাবে শেষকরা যায় না। আবার এমনও হয় সাক্ষাতকার দেয়ার সময় আপনি নিজের মতো করে কিছু কথা বলেছে, তা সংবাদ দাতা বা তার উধ্বর্তন কর্মকর্তার মনমতো হলনা তা কিন্তু কেটে ফেলাহয়। আমি যেটা মনে করি এই ভিডিওটা তার ব্যতিক্রম হয়নি। আর সেটাই যদি হয়েথাকে, তাহলে আরও কয়েকটি প্রশ্নের উদয় হয়! যদি এমনটা হয়েথাকে, তাহলে কেন ঐ ছাত্ররা ভূল উত্তর বা সাক্ষাতকার দিতেগেল? তারাতো জানতোই এটা টেলিভিশনে প্রচার করাহবে। এছাড়াও কিছু ব্যাপার থাকে, সেটার জন্য, কিছু সটকাট পদ্ধতি মেনে চলতে হয়। আশ্চর্যের বিষয় সেটাও হয়েছে। আরাও অদ্ভুদ ব্যাপার আমি যদি প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে নাই পারি তাহলে, আমি কেন সেখানে মিনিটের পর মিনিট দাড়িয়ে থাকবো? অবশ্যই আমি হলেও সেটা করতাম না। সেখান থেকে পালিয়ে আসতে যথা সাধ্য চেষ্টা করবো। খুব বেশীহলে একটা প্রশ্ন করার সুযোগ দিতাম। কিন্তু ঐ ছাত্ররা তা করে নি কেন? তা না হলে সাংবাদিকে ভদ্র বা অভদ্র ভাষায় বলে দিতাম সাক্ষাতকার দিতে রাজি নই।
এছাড়া হাজার হাজার এ+ পাওয়া ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে কেন ৬ জনকে বেছে নেয়া হলো? সেটাও আমার বোধগম্য নয়। আর বাকি ৭ জনকে কেন অন্য জি পি এ পাওয়া শিক্ষার্থীদের নেয়া হলো?
যাকগে, আমি মনেকরি এটাও একটা "হলুদ" সাংবাদিকতা! বলবোই না বা কেন? মন্ত্রী,এমপি,র্যাবের পরিচালক গণেরা যখন সংবাদ সম্মেলন করে ভূল শব্দ উচ্চারন করেন, তখন আপনারা কি করেন? ও তখন তো আবার আপনারা পারিশ্রমিক পান! বা দেশের হেভিওয়েট হওয়ার কারনে প্রতিবাদ করতে বা বলতে ভয়পান!? সাংবাদিক সমাজ আপনাদের বলি, আগে তাদের ভূলগুলি দেশের মানুষের কাছে প্রচার করেন। আবার করেন না যে তাও কিন্তু নয়! সাবেক সমাজ কল্যাণমন্ত্রী মহাসিন আলীকে নিয়ে অনেক প্রতিবেদন করেছেন। ও সেটাতো ছিল আপনাদের স্বার্থের জন্য!?কথায় বলে না আপনি যাকে ভালোবাসেন না, তার ছায়া টাকেও ঘৃণা করেন। আপনাদের কি দেখিয়ে দিতেহবে? দেশের একজন মন্ত্রী যখন ৩৭ কে ৭ ত্রিশ বলেন, তখন আপনি কই ছিলেন? র্যাবের একজন পরিচালক যখন ৪৪ কে বলেন চৌচল্লিশ! বলি তখন আপনি কই ছিলেন? বাংলাদেশে এই শব্দদুটি কেথায় আছে? আঞ্চলিক ভাষাও হয় কি না তা নিয়েও আমার যতেষ্ট সন্দেহ আছে! আমাদের আইন প্রণনয়কারী ও আইন শিৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী যদি বাংলার এমন ভূল উচ্চারন করেন তাহলে সেটাকে কি নিছক ভূল বলে চালিয়ে দিবেন? তাই যদি করেন তাহলে সেই কথিত জি পি এ ৫ পাওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের ভূলগুলো কোন ভূলই না, কোন ব্যাপার না!
আসলে সব সম্ভবের দেশ হলো বাংলাদেশ, এখানে কোন কিছুই অসম্ভব নয়!।
ভালই লিখেছেন
ردحذف