ইমামের কথায়

বাবা মারা যাবার আজ দশবছর হতে চলছে।তখন থেকে সংসারটা মেয়েই চালায়।
এই রমজান মাসেই বাবা মারা যাওয়ায়,আমার কাছে রমজান মাসটা অনেক গুরুত্বপূর্ন।এজন্য সারাবছর মসজিদের ধারের কাছে না গেলেও।রমজান মাসে প্রতি ওয়াক্তে মসজিদে গিয়ে নামাজ পরি।এমনি এক জুম্মার দিনে ইমাম সাহেব বয়ান দিলেন,মাঝে মাঝে বাড়ীর মহিলাদের প্রসংশা করতে হয়।সেদিন বাড়ীতে এসে ইফতারের পর ভাত খাওয়ার পর মাকে বল্লাম আলহাম্দু্লইল্লা আজকে তরকারিটা দারুন হয়েছে।এটা শুনেই মা একটা মুচকি হাসিদিয়ে,ভাত তরকারির গামলা মাথায় ঢেলেদিয়ে বলছে,আজ সাতাশ বছর তোকে রান্না করে খাওয়াচ্ছি কোনদিনও বল্লিনা রান্না ভালোহয়েছে।যেমনি তোর চাচাত বোন রান্না করলো সেদিনেই প্রসংশার অভাব নাই।মা বলেই চলছে,এজন্য রুহির সাথে তোর এতো আলাপ!তাইতো ভাবি রুহির বাবার সংসার চলে না আর সে এত নতুন নতুন জামা কাপড় পায় কোথায়?এসব শুনতে শুনতে মনেমনে ইমাম সাহেবকে গালি দিচ্ছি আর বলছি রুহির সাথে ভাইবোনের সম্পর্ক ছাড়া আর কোন সম্পর্ক নাই।তার নতুন নতুন জামা কাপড়ের রহস্যও জানি না।



সেদিন কিছুটা মনখারাপ হলেও,ইমাম সাহেবের ঐ কথা ভুলতে পারিনি।হাজার হলেও মসজিদের ইমাম সাহেবের কথা।তাই সেদিনের পরে আরও একদিন বোনের প্রসংশা করতে গিয়ে কি মারটাইনা খেয়েছি।
আমার কাপড়-চোপর সব সময় বোনেই পরিস্কার করত।সেদিনও আমার কাপড় ধোয়ার জন্য বোনকে দেই,আগেই পরিকল্পনা করেছি কাপড় ধোয়ার জন্য এবার বোনের প্রসংশা করবো।তাই পরের দিন কাপড় পরার সময় বোনকে ডেকে বলছি,কালকে কাপড় ধোয়া খুব ভালো হয়েছে,দারুন পরিস্কার হয়েছে,তাছাড়া ধোয়া কাপড় দিয়ে সুন্দর একটা ঘ্রান বেড়হচ্ছে,মনে হচ্ছে নতুন কাপড় পরছি।এ কথা শুনে খুশির বদলে বোন কান্নাকরা শুরু করল।সে কি কান্নাকাটি।মনেমনে ভাবছিলাম আমি আবার কি করলাম।পরেক্ষনেই জানতে পারলাম,গতকাল কাপড়গুল বোন নয় আমাদের বাড়ীর কাজের বুয়ার মেয়েটি পরিস্কার করেছে।সেদিন থেকে নিজের কাপড় নিজেকেই ধুতেহয়।এর পরথেকে কখনো আর বাড়ীর মহিলাদের প্রসংশা করিনি আর ইমামদের প্রতি একটা বিরুপ ধারনার জন্মহয়।

আপনার মূল্যবান মতামত প্রদান করুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন