সন্ত্রাসী হামলা নাকি এসি বিস্ফরণ

ছাত্র জনতার প্রবল গণ-আন্দোলনের মুখে আওয়ামীলীগ সরকারের প্রধান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতনের মধ্যমে আওয়ামিলীগ সরকারের টানা প্রায় ১৭ বছরের শাসনের আবাসন ঘটে।হাসিনাকে স্বৈরাচার উল্লেখ করে অনেকে স্বৈরাচারের পতন হিসেবে যোগ করেন।
তবে হাসিনার পতনের সাথে সাথে আইনশৃংখলা চরম অবনতি ঘটে। হাসিনার পতনের পরেপরেই আইন শৃঙ্খলা বাহিনী উপর হত্যাজজ্ঞ শুরু হয়। আওয়ামীলীগ সমর্থকের উপর শুরু হয় জুলুম নির্যাতন হত্যা,খুন,ধর্ষণ,হামলা,মামলা,হুমকি ধমকি,ছিনতাই,ডাকাতি,রাহাজানি এসব নিত্যদিনের রুটিনের পরিনত হয়েছে। বর্তমান অন্তবর্তিকালীন সরকার এসব নিয়ন্ত্রণে ব্যার্থ।উপরন্তু আগস্টের ঘটনার বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করার ইডিমিনিটি জারি করে। এছাড়া সারা দেশের জেলখানায় বন্দি,চিহ্নিত সন্ত্রাসী, দাগি আসামি,বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠীর সদস্যদের,এবং অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলার আসামি যেমন,বিডিআর বিদ্রোহ, ২১ আগস্ট, ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার আসামিদের ছেড়ে দেয়ার অবস্থা আরো অবনতির দিকে যাচ্ছে। যা ইদানিং ভয়ানক রূপ ধরন করেছে।একাধিক স্থানে মেয়েদের খেলা ধুলায় বাঁধা দেয়ার মত ঘটনা ছাড়াও লালন উৎসব এমনকি দেশের কোথাও কোথায় নিরাপত্তার অজুহাতে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড স্থগিত করতে বাধ্য করতে হয়েছে।
দেশের আইনশৃঙ্খলার এতোটা অবনতি হয়েছে যা সরকার কঠোর হাতে অপ্রকাশিত রেখার অপচেষ্টা করছে। এরা আওয়ামীলীগের চেয়ে বরং বেশী তথ্য গোপন করছে।একটা দেশ পরিচালনায় যা খুব একটা আপরাধ নয়। 

৫ ই অগাস্টের পর সবচেয়ে বড় দুটি প্রতিবাদ চোখে পরেছে।মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, দেশের সংবাদমাধ্যম নজিরবিহীন স্বাধীন ভোগ করছে।অপরদিকে সম্পাদক পরিষদ ৫ ই নভেম্বর, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এখনো আক্রমণের মুখে জানিয়ে বলেন,

সম্পাদক পরিষদ অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে, স্বাধীন সাংবাদিকতার চর্চা অক্ষুন্ন রাখার পরিবেশ নিশ্চিতের এ প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও এখনো সমাজের কোনো কোনো অংশ থেকে দেশের গণমাধ্যমগুলোর স্বাধীনতার ওপর নানাভাবে আক্রমণ অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে দেশের শীর্ষ কয়েকটি মুদ্রিত গণমাধ্যমের কার্যালয়ে হামলা-ঘেরাওয়ের হুমকি দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। প্রথম আলো, ডেইলি স্টারসহ কয়েকটি পত্রিকা তাদের প্রধান কার্যালয়ের নিরাপত্তা চেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আবেদনও করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর দ্রুতগতিতে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ্য।

সম্পাদক পরিষদ মনে করে, কোনো পত্রিকার পরিবেশিত কোনো সংবাদ বা সম্পাদকীয় নীতিমালা নিয়ে কারো কোনো আপত্তি থাকলে তিনি লেখালেখির মাধ্যমে নিজের বুদ্ধিবৃত্তিক অবস্থান ও বক্তব্য তুলে ধরতে পারেন। কিন্তু এভাবে হুমকি-ধামকির মাধ্যমে গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধের প্রয়াস বিগত কাঠামোর জনবিরোধী চর্চারই পুনরাবৃত্তির নামান্তর।
 এ বিবৃতির মাধ্যমে সম্পাদক পরিষদ সরকারের মুখে ঝামা ঘসে দিয়েছে।এ সরকার দায়িত্ব গ্রহণের আগেই সব সমালোচনার পথ বন্ধ করে দিয়েছে।মুখে যতোই সমালোচনার আহবান জানাক।কিন্তু আইন করে সরকারের সমালোচনার পথ বন্ধ করে দিয়েছে।কেউ সমালোচনা করলে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। আওয়ামীলীগের চেয়ে এরা আরো বেশী কঠোর হাতে নিজেদের সমালোচনা প্রতিরোধ করছে।আওয়ামিলীগের মতো এরাও নিজেদের কথা ছাড়া আর কোন কিছু প্রকাশ ও প্রচার করতে দিচ্ছে না

দ্বিতীয় প্রতিবাদ করেছে বিএনপি!গত ২৭ সে ফেব্রুয়ারী ঢাকায় বিসিএস প্রশাসন কল্যাণ ভবনে সন্ত্রাসীরা বোমা হামলা চালায়!সেখানে একজন নিহত ও একজন আহত হয়।যা কোন মিডিয়া সেভাবে প্রচার করেনি।তিন দিন পর হঠাৎ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপির প্যাডে সে ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়।তার আগে বিষয়টি সম্পর্কে কেউ জানেই না,এমনকি কেউ কথাই বলেনি।প্রতিবাদটা দেখার পরেই স্বাভাবিক ভাবে মনে প্রশ্ন জাগে,এতো বড় একটা ঘটনা তিন দিন পর জানা লাগে, তাও একটা রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে।দেশের সংবাদমাধ্যম এমন কি অন্য রাজনৈতিক দলগুলো এ নিয়ে টু শব্দ পর্যন্ত করেনি।

তবে সে দিনেই বিএনপি তথ্যের ভুল স্বীকার করে বিবৃতি পরিবর্তন করে এসি বিস্ফরণের ঘটনা উল্লেখ করে দুঃখ প্রকাশ করে।
তবে প্রশ্ন থেকেই যায় সেদিন আসলে কি হয়েছিল,এসি বিস্ফোরণ নাকি বোমা হামলা?বিএনপি কি এতোটা ভুল করতে পারে? তারা কি এসি বিস্ফরণকে বোমা হামলা হিসেবে চালিয়ে দিতে পারে?তারা কি নিশ্চিত না হয়েই বিবৃতি দিয়েছে?আমার কাছে সে সব প্রশ্নে উত্তর হচ্ছে না।বিএনপি এমন ভুল করতে পারে না!সেদিন এসি বিস্ফরণ নয় অন্য কোন ঘাপলা ছিলো।এথেকে বুঝা যায় দেশের সংবাদমাধ্যমগুলো কেমন স্বাধীনা ভোগ করছে।

আপনার মূল্যবান মতামত প্রদান করুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন