প্রতিটি পিতা-মাতার কাছে তাদের সন্তান অমূল্য রতন,নাড়ীচিরা সাতরাজার ধন।প্রতিটা সন্তান তাদের কাছে এক একটা আর্শিবাদ,এক একটা আলৌকিক বিষয়।হাজার ঘটনার ইতিহাসের সাক্ষি।কত দূঃখ-কষ্ট আনন্দ-বেদনা তাদের ঘিরে।কত নির্ঘুমরাত,কত প্রতিক্ষা,কত ধৈয্য এক একটা সন্তানের জন্য।প্রতিটা পিতা-মাতাই তাদের সন্তানদের সেরাদের সেরা মনেকরে।অনেকের কাছে ছোট তুচ্ছো-তাচ্ছিল্লের কারন হোকনা কেন,যদি শাররীক,মানসিক বিকলাঙ্গ হোকনা কেন,নিজের সন্তানদের গুনেরকথা পিতা-মাতার কাছে অ-ফূরন্ত।এক এক করে গুনের কথা শুলনে কয়েকদিন এমনকি কয়েক মাস পর্যন্ত সময় লেগেযেতে পারে।এত কিছুর পরও সন্তানদের মানুষের মত মানুষ পিতামাতার কোন জুড়িনেই।সন্তানদের ভালোর জন্য জগতে এমনকোন কাজ নেই,যা পিতা-মাতা করতে পারে না।এমন অনেক উদাহরন আছে,সন্তানের জন্য কত পিতা-মাতা জীবণ পর্যন্ত উৎসর্গ করেছেন।
এর পরেও সমাজে বখেযাওয়া ছেলে-মেয়ের সংখ্যা অশংঙ্খ।হত্যা-খুন,চুরি-ডাকাতি,জঙ্গি সহ নানা অপরাধে অনেক পিতা মাতার সন্তান জড়িয়ে পরছে।এদের জন্য অনেক পিতা-মাতা সমাজে নিজেদের মূখ পর্যন্ত দেখাতে পারেনা।আদরের প্রিয় সন্তান আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে মৃত্যুবরন করলেও,অনেক পিতা-মাতাকে বুকে পাথর বেধে বলতে হয়,সে আমাদের সন্তান না!এমনকি অনেক পিতা-মাতা তাদের মৃত্যুদেহ নিতেও অস্বিকৃতি জানায়,পারলে হয়তো এও বলে তাদের কোন সন্তানেই নাই।আরও বিভস্য উদারন আছে,যেখানে নিজের প্রিয় সন্তানের হাতে অনেক পিতা-মাতাকে জীবণ পর্যন্ত দিতে হয়েছে।এসব কিছুর পরেও অনেক পিতা-মাতার সন্তান আছে,যারা পিতা-মাতার নাম উজ্জল করে,দেশ ও জাতিকে পৃথিবীর বুকেতুলে ধরতে কাজ করে যাচ্ছে।এসব কিছু দেখলে সকল পিতা- মাতার গর্বে বুৃক ভরে যায়।এর পরেও সমাজে যে অংশ,আমরা যাদের ইতর,বদমাইশ,খুনি,জঙ্গি ইত্যাদি নামে ডকি তারা আসলে কোথা থেকে আসে?তারাও তো কান না কোন পিতা- মাতার সন্তান।তাদের পিতা-মাতাও তো তাদের যত্নের কোন ত্রুটি রাখেনি।এরা তাহলে কিভাবে পয়দা হল এ প্রশ্ন আসা অবান্তর নয়।এই সমাজে বিভিন্ন অপরাধে যারা জড়িয়ে পরছে এর জন্য শুধু তাদের একার দায় নয়।এজন্য তাদের পিতা-মাতা, সমাজ ব্যবস্থা ও পরিবেশ অনেকটাই দায়ী।হয়তো বলতে পারেন কোন পিতা-মাতাই তার সন্তানের খারাব চায়না।সেটা মানছি কিন্তু,সন্তানের ভালোর জন্য অনেক সময় পিতা-মাতারা নিজের অজান্তেই ছোট ছোট কিছু ভুলের কারনে সন্তানের বিপদ ঢেকে আনে।
ছোট থাকতে সন্তান ছোট খাটো এটা ওটার জন্য বায়না করে।আপনার সাধ্যের মধ্যে হওয়ায় সাথে সাথে সন্তানের সে আবদর পূরন করেছেন।অনেক সময় আবার দেখা গেছে,আপনার সন্তান অন্য কারও সমবয়সী সন্তানের সাথে ঝগড়া করে শেষে আপনার কাছে নালিশ দিল,তখন আপনি নিজের আদরের সন্তানকে শাসন না করে অপরের সন্তানকে শাসন করছেন।এতে হয়তো আপনার সন্তানেরই বেশী দোষ ছিল,হয়তো সেটা আপনিও বুঝতে পেরেছেন।এ থেকে আপনার সন্তানের ভিতর ঢুকেগেল,ভুল করলেও আপনার কাছে বিচার নিয়ে গেলে সে পার পেয়ে যাবে।ছোট থাকতে সন্তানের যে এট ওটা নেয়ার অভ্যাস ছিল,বড় হতে হতে তার সে চাহিদাও বাড়তে থাকে।সাধ্যের মধ্যে না হলেও,সাথে সাথে তা পূরন করেছেন।এটাই হয়তো আপনার জন্য কালহয়ে দাড়িয়েছে।এভাবে চলতে থাকতে থাকতে আপনার সন্তানের চাহিদাও অনেক বেড়ে যায়।এবার সে অনেক বড় জিনিস দাবি করে।যা আপনার পক্ষে সম্ভব নাও হতে পারে।কিন্তু সন্তানের চাওয়া বলে কথা।তাই প্রাণপন চেষ্টা করছেন সন্তানের দাবি পূরন করতে।এতে কয়েকদিন সময়লাগায় আপনার সন্তান হয়তো ধরে নিয়েছে আপনি তার দাবি পূরন করতে পারছেন না।মনে মনে অনেক গালিদিয়ে নিজের ঝাল মিটাচ্ছে।কিন্তু তাতেও সে শান্ত হতে পারছেনা, এক সময় সে সুইসাইড করে বসলো!হয়তো তাকে মৃত্যুর হাতথেকে রক্ষা করলেন,এতেকরে আপনার নিজের মনে মধ্যে একটা ভয়ঢুকে গেলো,সন্তানের দাবি পূরন করতে না পারায় হয়তো আপনার সন্তানকে চিরতরে হারিয়ে ফেলতে পারেন।মনেকরি আপনার সন্তান আপনার কাছে একটা বাইক দাবি করছে,যা (আপনি কেন আপনার চৈদ্দোগুষ্ঠিও বাইক কিনে চরতে পারেনি) দিতে না পারায় আপনার সন্তান সুইসাইড করেছে।সন্তানকে হারানের ভয়েই,তাকে বাইক কিনে দিলেন।কিন্তু আল্লাহ্ না করুক কিছুদিন পর হয়তো শখের বইকে দূর্ঘটনায় আপনার সন্তানকে হারতে হলো!এমনটা এখন অহরহ ঘটছে।এজন্য অবশ্যই আপনি হ্যাঁ আপনি নিজেই দায়ী।প্রথমেই যদি আপনার সন্তানের দাবি পূরন করতে সময় নিতেন,তাহলে আজ হয়তো এ অবস্থার মধ্যে পরতে হতোনা।সন্তানের দাবি পূরন করতে যদি কিছুটা সময় নিতেন,তাহলে তার মধ্যে একটা বিশ্বাস ঢুকে যেত,যে তার দাবি পূরণ হতে কিছুটা সময় লাগেই,সে ভাবেই সে মানসিক প্রস্তুতি নিত,তাহলে হয়তো তাকে সুইসাইড করার মত অবস্থার মধ্যদিয়ে যেতে হতনা।
ছোট থাকতে,ভুল করলেও যখন আপনার কাছে নালিশকরে পার পেয়ে যেত,তখন তার কাছে আস্থা অর্জন হয় যে,কোন দিন হয়তো খুন করে এসেও আপনার কাছে মাফ পাওয়া য়াবে।এই বিশ্বাসের ফলেই কিছুদিন পর ঠিকই খুন করে এসে উল্ট আপনার কাছে নালিশ করছে।আপনিও বুঝতে পেরেছেন,আসলে সেইই খুনটি করেছে।কিন্তু নিজের সন্তান হওয়ায় সেবারও পূর্বের মত তার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।এতে আপনার সন্তানের ভবিষ্যৎ কল্পনা করতে পারছেন?কিন্তু ছোট থাকাকালিন সময়ে যখন ভুলকরে এসে আপনার কাছে নালিশ করত তখন যদি নিজের সন্তানের ভুলগুলো ধরিয়ে দিয়ে,যদি বলতে, বাবা এখানে তোমারই ভুলছিল।তাহলে হয়তো অতন্ত্য এটা বলতে পারি আপনার সন্তান আর যাইহোক খুনি হতে পারেনা।
উপরের ঘটনা দুটি অতিরিক্ত ভালোবাসা যাকে বলে মাথায় তুলে নিত্য করা এর ফলেই হয়েছে।কিন্তু এরও ব্যতিক্রম ঘটে।অতিরিক্ত অবহেলা,তুচ্ছ-তাচ্ছিল্ল্য,অবিশ্বাস,সন্দেন প্রবনতার কারনেও আপনার সন্তান আর দশজনের সন্তানের মত আপনার মাথাতুলে ধরবেনা,সবার কাছে আপনার মাথা হেট করবে,গর্বে বুক ভরার বদলে,লজ্জায় হারিয়ে যাবেন।অর্থাৎ বেশী আদর,স্নেহ,ভালবাসা যেমন ভালোনয়, তেমনি বেশী অনাদর,অবহেলাও ভালোনয়।তাই সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে আপনার সন্তানকে লালন পালন করতে হবে।তাহলেই সন্তানের জন্য নয় বরং নিজের জন্যই গর্ব হবে।
আপনি হয়তো ভাবছেন,সন্তানকে মানুষের মত মানুষ করে সন্তানের পরিচয়ে পরিচিত হবেন।হয়তো ভাবছেন লোকে বলাবলি করবে এট অমুকের বা তমুকের বাব!এগুলো মধ্যযুগিয় ধ্যানধারনা,এই আধুনিক যুগে এসব ধ্যানধারনার কোন স্থান নাই।আর যদি সেটাই ভেবে থাকেন,তাহলে আপনি পুরাই ব্যর্থ!সন্তানকে সঠিক ভাবে মানুষ করলে,সন্তান যতবড়ই হোকনা কেন লোকে বলাবলি করবে এটা তমুকের ছেলে।এটাই একজন পিতা-মাতার কাম্যহতে হবে।তবেই না একজন সফল পিতা-মাতা হতে পারবেন।