প্রশ্ন ফাঁসঃ দায় কার?

গত কয়েকবছর থেকে বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষা এমন কি চাকরির পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের হিড়িক পরেগেছে।প্রশ্ন ফাঁস রোধে সরকারের সকল পরিকল্পনা মহাপরিকল্পনা ভেস্তেগেছে।প্রশ্নফাঁস রোধে পরীক্ষার সময় ইন্টারনেট বন্ধকরার মত ঘটনা দেখাগেছে।তবুও প্রশ্ন ফাঁসের লাগামটেনে ধরা সম্ভব হয়নি।বরং দিন দিন প্রশ্নফাঁস আরও মহামারি আকার ধারন করেছে।সাম্প্রতি দেশের সর্বচ্চ বিদ্যাপিঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের "ঘ" ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস নতুন করে ব্যাপক আলোচিত বিষয়।
প্রশ্নফাঁস সম্পর্কে জানতে হলে,সবার আগে জানতে হবে প্রশ্ন কারা তৌরি করেন?একটা দুধের শিশুওজানে,প্রশ্ন তৌরিতে সুনির্দিষ্ট কমিটি গঠন করাহয়।তারাই পরীক্ষার প্রশ্ন তৌরি করে।সন্দেহনেই প্রশ্ন তৌরিতে সকলধরনের নিরাপত্তা গ্রহণকরা হয়।তার পরেও কেন প্রশ্ন ফাসঁ হচ্ছে?প্রশ্ন থেকেই যায়।কথা হচ্ছে,প্রশ্ন প্রণয়ন কমিটি ছাড়া আর কারও পক্ষে প্রশ্ন সম্পর্কে জানার কোন কথা নাই।তবুও জানছে কিভাবে সম্ভব?এটাই সম্ভব হয়েছে।প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় প্রশ্ন প্রণয়ন কমিটির কোন না কোন সদস্য অবশ্যই জরিত আছে।তানা হলে কোন ভাবেই কখনই প্রশ্নফাঁস করা সম্ভব নয়।করন,প্রশ্ন প্রণয়ন কমিটি ছাড়া আর কেউ জানতে পারার কথানয়,কি কি প্রশ্ন পরীক্ষায় আসছে।তাহলে প্রশ্নফাঁস করা করছে?ধরুন,আপনি কোন
একটা বিষয়ে প্রশ্ন করছেন,সেটা আপনি ছাড়া আর কারও জানার কথানয়।কিন্তু আপনি যখন সেটা টাইপ করার জন্য কোন কম্পিউটারের দোকেনে দিলেন তখন সেটা ঐ দোকানের টাইপিস্টের জানার আর কোন বাধা থাকেনা।টাইপ করা প্রশ্ন ধরেন আপনি ঢাকায় পাঠাবেন,এজন্য আপনি পোস্ট অফিসের সাহায্য নিয়ে গন্তব্যে পৌছেদিলেন।এবার যদি প্রশ্ন ফাঁস হয়ে তাহলে দায়ি কে?হয়তো আপনি,নয়তো কম্পিউটার দোকানের টাইপিস্ট,পোস্ট অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারি আর নয়তো আপনি যাকে প্রশ্ন পাঠিয়েছেন তিনি প্রশ্ন ফাঁস করেছেন।এখানে উদাহরন হিসেবে শুধু একজন আপনার কথা বলা হয়েছে।কিন্তু কোন পরীক্ষর প্রশ্ন একজন তৌরিকরেনা,এখানে অনেক মানুষের দরকারহয়,সেই প্রশ্ন টাইপ করার জন্য কোন কম্পিউটারের দোকানে যেতেহয়না,প্রশ্ন টাইপ করার জন্য কমিটিরই নির্দিষ্ট স্থান আছে,প্রশ্ন সরবরাহ করার জন্য পোস্ট অফিসের সাহায়্য নেয়াহয় তার পর স্থানিয় সর্বচ্চো কর্মকর্তার কাছে পৌছেদেয়াহয়,পরীক্ষার সময় তিনিই কেন্দ্রে কেন্দ্রে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।প্রশ্ন তৌরি,প্রশ্ন টাইপ করা,প্রশ্ন সরবরাহ ও প্রশ্ন বিলি করা এ সবেই প্রশ্ন প্রণয়ন কমিটি ও পরীক্ষা কমিটির অংশ।এর পরও কোন পরীক্ষার প্রশ্ন যদি ফাঁসহয় তাহলে তার দায় অবশ্যাই প্রশ্ন প্রণয়ন কমিটি নয়তো পরীক্ষা কমিটিই অবশ্যই দায়ি।এ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের "ঘ" ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় আর কেউনয়,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের "ঘ" ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন প্রণয়ন কমিটি ও পরীক্ষা কমিটি ছাড়া আর কেউ দায়ি নয়।
বাংলাদেশ সবসম্ভবের দেশ।এখানে যা কোন কিছুই সম্ভব।প্রশ্ন ফাঁস,প্রশ্ন প্রণয়ন ও পরীক্ষা কমিটি দায়ি হলেও জোরকরে দায় চাপিয়ে দেয়াহচ্ছে,যারা প্রশ্ন কিনে পরীক্ষা দিচ্ছে সে সব কোমলমতি পরীক্ষার্থীদের উপর।গত কয়েক বছরের প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় তেমনটিই দেখেছি।প্রতিটি প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় গণহারে পরীক্ষার্থীদের আটক/গ্রেপ্তার করা হয়েছে।এতে করে প্রশ্ন ফাঁসের সাথে জরিতরা বরাবরই আরালেই থেকে যায়।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায়ও সেটাই দেখেছি।ফাঁসকৃত প্রশ্ননিয়ে পরীক্ষা দিয়েছে এমন কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে,তবে তারা কোন ভাবেই প্রশ্ন ফাঁসের সাথে জরিত নয়,তারা মূলত ফাঁসকৃত প্রশ্ন নিয়ে পরীক্ষা দিয়েছে।আটককৃতদের কাছে প্রশ্ন কোথায় পেয়েছে এ সম্পর্কে জানতে চাওয়াহলে, একসময় উঠে আসে বগুড়ার একাধিক কচিং ও ভর্তি তথ্য সেন্টারের।কিন্তু তারা কোথা থেকে প্রশ্ন সরবরাহ করেছে কেউ জাতনেও চায়নি।এমনকি জানার শেষ চেষ্টাপর্যন্ত কারাহয়নি।আমি বলি এসব কোচিং ও ভর্তি তথ্য সেন্টাররাও প্রশ্ন প্রণয়ন ও পরীক্ষা কমিটি ছাড়া আর কারও কাছথেকে প্রশ্ন পায়নি।তাছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্ন বগুড়ায় কিভাবে পাওয়া যায়?
সবারই আশা থাকে দেশসেরা বিদ্যাপিঠে পড়াশুনা করাও ভাল ফলাফল করার।এজন্য অনেকে অসদুপায় অবলম্বন করে।এটা আগেও ছিল,এখন আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।আগে যেমন ভাল ফলাফলের জন্য পরীক্ষার্থীরা নকলেমত অসদুপায় অবলম্বন করতো।তখন কিন্তু সরাসরি পরীক্ষার্থীরাই দায়ি থাকতো।কিন্তু বর্তমানে প্রশ্ন ফাঁসে পরীক্ষার্থীরা কখনই দায়ি নয়।এজন্য কোমলমতি দেশের আগামী প্রজন্মের কান্ডারিদের অপরাধ না করেও অপরাধী বানানোর জোর চেষ্টা চালান হচ্ছে।যদিও এদায় বর্তমান প্রজন্মের কান্ডারিদের।এসব নিরপরাধ,অপরাধী অথচ মেধাবীদের জন্য অবশ্যই বাংলাদেশকে কঠিন মূল্যদিতে হবে।


1 মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
নবীনতর পূর্বতন