মায়ের কম্পানি

চারদিকে পিতা-মাতার উপর সন্তানের অমানবিক নির্যাতন দেখতে দেখতে অনেক পিতা-মাতাই,নিজের সন্তানের উপর বিশ্বাস হারিয়ে ফেলছে।বৃদ্ধবয়সে যে ছেলে-মেয়েদের তাদের পিতা-মাতার দেখাশুনা করার কথা,তারাই জীবনের কঠিন ষেশ সময়ে পিতা-মাতাকে নিঃশ্বকরে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসছে।এসব দেখতে দেখতে নির্ভরশীলতার পরিবর্তে,সন্তানের প্রতি অনির্ভরতার জন্মদেয়।
ছবিঃ প্রতিকি

আমি এমন একজন মাকে দেখেছি,যে কিনা শুরু থেকে নিজের সন্তানের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন।এমনকি মুখফুটে পাড়া প্রতিবেশীদের কাছে তা বলতেও শুনেছি,এই ছেলে ভবিষ্যৎতে আমাকে ভরন-পোষণ দিবেনা এক কথায় দেখবেনা।যেখানে এখনো অনেক পিতা-মাতা বৃদ্ধ বয়সে,ছেলে সন্তানের উপর অস্থা রাখতে ছেলে সন্তান কামনা করে।সেখানে সেই মা তার ছেলে সন্তান ছোট থাকতেই,বুঝে গিয়েছেন বৃদ্ধ বয়সে সে তাকে কষ্ট দিবে,তাই সন্তানের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন।


যদিও আস্থা হারিয়ে ফেলার জন্য তেমন কোন কাজই করেনি,উপরক্ত হারনো আস্থা ফিরে পেতে ছেলেটি অনেক চেষ্টা করেছে।কিম্তু কোন চেষ্টাই কাজে আসেনি।বরাবরই তার মা তাকে সন্দেহের চোখেঁ দেখতে থাকে।সেটা তার ছেলে বুঝতে পরে,তবে তার পক্ষে আর কিছু করার থাকেনা।

সে সময় কেন এখনো অনেক পিতা-মাতাই তাদের সন্তানের নামে ডিপোজিট করে থাকে।সে মা ও এর থেকে আলাদা ছিলেন না।আমি যে মায়ের কথা বলছি তার তিনটা সন্তান বড়টি ছেলে পরের দুটিই মেয়ে সন্তান।একদিন ঐ মায়ের ছেলে সন্তানটি দেখলো,তার মা যে ডিপোজিট করেছে তারর সব কটিতেই তার বোনদের নমিনি করা হয়েছে।সেটা দেখে ছেলেটি তার মাকে জিজ্ঞেস করলো,আম্মা তোমার সব কটি ডিপোজিটে বোনদের নমিনি করেছেন,তাহলেতো মারা গেলে সব টাকাই বোনেরা পাবে।আমিতো কিছুই পাবোনা।তার মা তাকে জানালো না তুই কিছুই পাবিনা।সে বল্লো মা তুমিতো অন্যায় করছো।মা রাগ হয়ে জানাল,তুইতো আমার সন্তান,আমি জানি তুই কেমন?আমি জানি তুই ভবিষ্যৎতে আমাকে ভরন-পোষণ দিবি না তাই তোকে নমিনি করিনি হয়েছে।

সেদিন থেকে ছেলেটি কিছুটা হলেও তার মায়ের উপর অসন্তুষ্ট ছিল।তবুও তার মায়ের মন জয় করার চেষ্টা করেগেছে।ছেলে হলেও সে তার মায়ের সব কাজে সহযোগিতা করত।তবুও সে তার মায়ের মন কখন জয় করতে পারেনি।মায়ের সকল কাজ করার পরেও সে মা মানুষের কাছে বলাবলি করতো ছেলেটি কোন কাজ করেনা।যদিও ছেলেটি চাইতোনা তার কাজ করার কথা মানুষ জানুক,সে চাইতো তার কাজ করার কথা মানুষের কাছে প্রচার না করুক কিন্তু মানুষের কাছে যেন বদনাম না করে।

কম্পানিতে কাজ করলে যেমন,যত ভালো কাজেই করেন না কেন তার প্রসংশা পাওয়া দুস্কর,কিন্তু একটু খারাব কাজের জন্য হাজার হাজার তিরস্কার শুনতে হয়,এমনকি একটু ভুলের জন্য বারবার চাকরি চলে যাওয়ার ভয় থাকে।তেমনি সে মা ছিল একটা কম্পানির মত।তার ছেলে যত কাজেই করেনা কেন তার কোন প্রসংশা পায়না বরং সব কিছুতেই তার সমালোচনা চলতেই থাকে।

যদিও ছেলেটি কোন দিন তার পিতা-মাতার টাকা মেরেখায়নি,তবুও কোন পাওনাদার যদি টাকা দিতে এসে দেখে তার মা নেই,তাহলে পাওনাদার চলে যায়।সে টাকা নিতে চাইলে পাওনাদার বলে না বাউ তোকে দেয়া যাবেনা,তুই যদি খেয়ে ফেলিস!তখন ছেলেটির মনে কি হয় তা সে ছাড়া আর কেউ কল্পনা করতে পারেনা।এমনকি তার পিছনে কোন কিছুতেই টাকা পয়সা খরচ করতে চাইতোনা।যদিও তাদের টাকা পয়সার তেমন কোন অভাব ছিলনা,তবুও তার পছন্দের বিষয়ে,টাকা পয়সার অজুহাতে পড়াশুনা করতে পারেনি।এমনকি পড়াশুনার জন্য তার মায়ের কাছে সুদের উপর টাকা নিতেও দেখেছি।অথচ দেখেছি তার বোনদের বেলায় সেই মা পুরোটাই উল্টো।

আমি এটা দেখেনি বৃদ্ধা বয়সে সেই মায়ের কি হাল হয়েছে।বৃদ্ধা বয়সে ছেলেটি বৃদ্ধাশ্রমে রেখে এসেছে নাকি সেটাও করেনি।নাকি তার কোন খোজ খবর রেখেছে কিনা।নাকি অন্য সন্তানের মত,তার মাকে কোন ঝোপে,জঙ্গলে না হয় কোন রেললাইনের ধারে রেখে এসেছে কিনা।ঠিকমত খাবার দাবার দিয়েছে কিনা,বা সে তার বৃদ্ধা মায়ের সাথে কেমন আচরন করেছে,তার বোনরাই বা তার বৃদ্ধা মায়ের কতটা খোজ খবর রেখেছে।এসবের কিছুই আমি জানিনা।তবে এটা হলব করে বলতে পারি,ছেলেটির সাথে কথা বলে এটা মনে হয়েছে যে,তার মা তার সাথে যেমন আচরনেই করুক না কেন,সে তার বৃদ্ধা মায়ের সসথে কোন খারাব আচরন করতে পারেনা।

2 মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
নবীনতর পূর্বতন