বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিও

এ পেষ্টি যখন লিখতে বসছি,তখন অবলম্বনের আশায় একটা কম্পানিতে টানা কয়েকদিন ঘুরঘুর করছি,কিন্তু কিছুতেই কাঙ্খিত সেই অবলম্বন পাচ্ছিনা।যাক সে সব ব্যক্তিগত কথা।


বেশকয়েক বছর ধরে নন-এমপিও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারিরা নানা সময়ে এমপিওর জন্য অন্দোলন করে আসছেন।কিছুতেই কিছু হচ্ছেনা।এমনকি সরকারের গুরুত্বপূর্ন ব্যক্তিদের আশ্বাসেও কাজ হয়নি।তাই এবার বাধ্যহয়ে নন এমপিও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারিরা আমরন অনশনের ডাকদিয়ে বরাবরের মত এবারও জাতীয় প্রেসক্লাবে জড়ো হয়েছেন।কিন্তু বরাবরই শিক্ষকদের এ আন্দোলন কোন না কোন কারনে চাপাপরে গেছে।শিক্ষকদের সমাবেশস্থল জাতীয় প্রেসক্লাব হলেও দুএকটি পত্রিকা ছাড়া কোন মিডিয়াা গুরুত্বদিয়ে ফলাও ভাবে কোন প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি।এবারও তার ব্যতিক্রম দেখছিনা।দু'একজন কলামিষ্ট ছাড়া কেউই শিক্ষকদের এ আন্দোনলের বিষয়ে মূখ খুলছেননা।তবে আশার কথা সেদিন প্রধানমন্ত্রী সংসদে এসব নন এমপিও শিক্ষক কর্মচারিদের বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধানের কথা জানিয়ে,নন এমপিও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারিদের জন্য নিতিমালা প্রকাশ করেছেন।



তবে আমি জানিনা,সরকার এই নন এমপিও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারিদের প্রতি কতটা সহমর্মিতা ও গুরুত্ব দিচ্ছে?

এমনি একটি নন এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আমি দেখেছি,যা আমার এলাকায় অবস্থিত।ঐ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারিরা সেই ১৯৯৬ সাল থেকে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন।বিনিময়ে সে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোন শিক্ষক কর্মচারিরা কোন দিন কোন বেতন পাননি।তবুও তারা তাদের শিক্ষার্থীদের পড়াশুনা চালিয়ে আসছে এই আশায় যে,কোন একদিন সরকারের টনক নড়বে এবং তাদের পরিশ্রমের সঠিক মূল্য ঠিকই পাবেন,কিন্তু তাদের সে আশা আজ ২০১৮ সাল শেষ হতে চলছে,তবুও সরকার এ সব শিক্ষক কর্মচারিদের মনের আশা পূরন করতে পারছেনা।উপরন্ত সময়ে সময়ে বেতনের আশায় শূন্য পকেট আরও শূন্যহতে থাকে।


এই ক বছরে সেই প্রতিষ্ঠানথেকে পাসকরে অনেকে উচ্চশিক্ষিত হয়েছে অনেকে আবার চাকরিও করছে,অনেকে ব্যবসায়ী হয়েছে অনেকে আবার সরকারের বিভিন্ন বিভাগে চাকরি করছে।কিন্তু যারা তাদের শিক্ষাদিয়ে বড় করলো,দূঃখের বিষয় সে সব শিক্ষকেরাই আজও বেতন পাননা!


এ নন এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারিরা তাদের প্রতিষ্ঠানের পিছনে সময়,শ্রম,অর্থ ব্যায়করে আজ নিঃশ্ব।অনেক শিক্ষক আজ সমাজ,চক্ষু লজ্জার ভয়ে রাজধানী ঢাকায় পারিজমিয়েছে।যানেন এসব শিক্ষকেরা আজ ঢাকার কি করে? আমি দেখেছি এসব শিক্ষকেরা আজ ঢাকার বিভিন্ন অফিস,বাসায় দারোয়ানের কাজ করে !যাদেরকে এলাকায় সবাই সম্মান করতো,পথেঘাটে সবাই স্যার স্যার করতো,তারাই আজ কোন অফিসারের দারোয়ান,সে সব নন এমপিও শিক্ষকেরাই কোন অফিসারের বাসার দরজা, গাড়ীর দরজা খুলেদিয়ে স্যার স্যার করে!


শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড এ কথা আমরা সবাই জানি,কিন্তু সেই শিক্ষার কারিগর শিক্ষকের যদি মেরুদন্ডই না থাকে,তাহলে সেই শিক্ষাদিয়ে কি হবে?মেরুদন্ডহীন শিক্ষকের কাছে কি শিক্ষা আশা করা যায়?খেয়ে না খেয়ে থাকা শিক্ষকের কাছথেকে উত্তম শিক্ষা আশা করা যায়না।


শিক্ষকদের এ অবস্থাথেকে উদ্ধার করা দরকার,শিক্ষার মান উন্নত করা দরকার,এ জন্য শিক্ষকদের মেরুদন্ড দরকার,দরকার মেরুদন্ড সোজা করার,শিক্ষকদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি করা দরকার আর এ জন্যই চাই মান্থলি পে অর্ডার(এমপিও)।


এসব নন এমপিও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারিদের এমপিওভুক্ত না করে,নিজস্ব অর্থায়নে যতই পদ্মা সেতু বানাইনা কেন,একটি নয় হাজারটা স্যাটেলাইট শক্তিধর দেশ হলেও বাংলাদেশের জন্য কোন
সুফলবয়ে আনবে না।

1 মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
নবীনতর পূর্বতন