বাবা'র অমৃত শ্রেষ্ঠ সূখি হাসি

এই দুনিয়ায় কতো কিছুই না হয়।খুব সহজে মানুষের মনভেঙ্গে দেয়া যায় আবার অতি ছোট ছোট কাজের মাধ্যমে মন জয় করা যায়।এখানে কেউ খেয়ে শান্তি পায় আবার কেউ খাইয়ে শান্তি পায়।পৃথিবীটা বড়ই বিচিত্র। এরকম অহরহ ঘটছে,কখন আবার খবরের শিরনাম হচ্ছে।বাবা-মা রা কতো কষ্ট করে সন্তানদের মানুষ করছে (সেটা যে ভাবেই হোক না কেন)। পিতামাতা কখনেই চায় না,তাদের সন্তান তাদের মতো হোক!বরং তারা সবাই চায় তাদের সন্তান যেন খুব কম হলেও তাদের মতো না হয়!বরং তাদের চেয়ে একটু হলেও উন্নত জীবনধারন করুক।কিন্তু এই সন্তানেরাই আবার (প্রশ্নবিদ্ধ) ইনকাম করার পর তাদের বাবা-মা কে (অনেক বলবো না) প্রচুর কষ্টদেয়। অনেকে আবার বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে তাদের বৃদ্ধাআশ্রোমে পাঠিয়ে দেয়! মানুষের ডান হাত বাম হাত ছাড়াও আরও একটি হাত আছে এর নাম অজুহাত।বৃদ্ধ পিতা-মাতা আশ্রোমে থাকার পরও কার কাছে কোন প্রকার অভিযোগ করে না!এই সময়ও তারা তাদের সন্তানদের জন্য নিজ নিজ সৃষ্টি কর্তার কাছে করুণ সূরে প্রার্থনা করে যেন তাদের সন্তান থাকে দুধে-ভাতে  ।এদিকে সন্তানেরা তাদের পিতা-মাতা কে বৃদ্ধাআশ্রোমে পাঠিয়ে দায়সারে,কোন দিনও একবারেরজন্য কোন খোজ খবর নেয় না!আবার এমনও দেখা যায়,পিতা-মাতাদের দুই
ভাই ভাগ ভাগ করে মানে এক মাসের ১৫ দিন এক ভাই আর বাকি ১৫ দিন আর এক ভাই খাওয়ায়!যে ভাইয়ের ভাগে ১৫ দিন খায় সে ১৫ দিন অন্য ভাই পিতা-মাতার কোন খোজ খবর নেয় না। ঐ ভাইদের কাছে আমার খুব জানতে ইচ্ছা করে,আচ্ছা আপনারা যখন ছোট
ছিলেন তখন আপনার বাবা-মা কি আপনাদেরও ভাগ ভাগ করে খাইয়েছিলেন?তারাও কি আপনাদের এক ভাইকে ১৫ খাওয়াইছিল আর অন্য
ভাইকে ঐ ১৫ দিন না খাইয়ে রাখছিল? যদি এমনটি করে থাকে তাহলে ভিন্ন কথা।আর তা না হলে আপনারা তাদের সাথে এমন করেন কেন?এই লেখার অবশ্যই একটা কারন আছে তা আপনাদের আজ বলবো। এটা একটা বাস্তব ঘটনা।একজন বাবা বয়সের ভারে আজ নুজ্জ।এখন আর কোন ইনকাম করতে পারে না।বাজারে কয়েকটা দোকান আছে,তার ভারা দিয়েই সংসার, স্বামী-স্ত্রীর ঔষুধ পাতি,নাতি-নাতনিদের আবদার মেটায়। কিন্তু তা দিয়ে কোন ভারেই পুশিয়ে উঠতে পারে না।প্রতিমাসেই দোকানে দিন দিন বাকির পরিমান বেড়েই চলে।
এভাবে চলতে চলতে বাকি পরিশোধের জন্য প্রতি বছর জমি বিক্রি করতে হয়।এভাবে তাদের জমিও এক দিন ফুরিয়ে যায়। বাকির পরিমান প্রতিমাসে
হু হু করে বাড়তে থাকে,ঔষুধ পাতির খরচ ও বাড়তে থাকে,দোকানদারও আর
বাকি দিতে চায় না।বড় ছেলে ঢাকায় থাকে আর ছোট ছেলে কিছু দিন আগে বিদেশে গেছে!তার বিদেশ যাওয়ার দেনা পাওনা এখনো শেষ হয়নি,সম্ভবত তাই
সে পিতা-মাতার দিকে নজর দিতে পারছে না।বড় ছেলেও টানাপোড়নের মধ্যে দিন
পার করছে। সে দিন বড় ছেলে বাড়ীতে অসলো।সারা দিন বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিল। সন্ধার পর বড় ছেলে বাড়ীর পথে চাচ্ছে আর তার বাবা বাড়ী থেকে বাজারের দিকে আসছে।এমন সময় দুজনে মূখোমূখি ধাক্কা খাওয়ার মতো অবস্তা।আমি
ভাবতে লাগলাম এ কোন বেয়াদব ছেলে রে বাবা!বাবার সাথে ধাক্কা খায়? (যদিও এর আগে কখনো এমনটি দেখি নি বা হয় নি)কিন্তু একি?ধাক্কা খাওয়ার অবস্তায় বাবা কি মন খারাব বা রাগ করবে,তা না বাবা যেন একটি স্বর্গের হাসি দিল।অবাক হয়ে ঘটনাটি দেখছি। তার বাবার হাসিটা অনেক দিন মনে থাকবে।সে হাসিটা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সুখি মানুষের হাসির সাথে তুলনা করলেও ভুল হবে না। মূল ঘটনাটি জানার জন্য আরও বেশী আগ্রহবোধ করলাম।তবে
নিরাশ হইনি।তার বাবা একটু দূরে
দোকানের লাইটের কাছে দিয়ে হাতে কি যেন দেখছে?তখনি দেখতে পেলাম হাতে নতুন গজগজে দুটি ৫০০ টাকার নোট!
তা দেখে বাবা আবার মুচকি অমৃত হাসি দিতে দিতে বাজারের ভিতর আমার দৃষ্টিসীমার বাইরে চলে গেল,আর আমি ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইলা!বুঝতে
পারলাম ধাক্কা নয়!,কাউকে না দেখার জন্য ছেলে নিচ দিয়ে বাবার হাতে টাকাটা ধরিয়ে দিয়েছে!আমার হ্যিংসে হলো আমি সেই সুযগটা পাইনি!বাবার কাছ থেকে শুধু নিযেই গেছি কখনো কিছু দিতে পারিনি!ইশ আমি যদি আমার বাবাকে দিতে পারতাম তাহলে নিজের বাবার অমৃত শ্রেষ্ঠ সুখি মানুষের হাসিটা দেখতে পেতাম।
প্যাচ করছে।কিন্তু আর যাই হোক,বাবার অমৃত শ্রেষ্ঠ সুখি মানুষের হাসিটা আজীবন মনে ধাকবে। আমরা কি পারিনা এরকম কিছু কাজ করে আমার জন্মদাতা-জন্মধাত্রী মা কে খুশি করতে?যাতে তারা অমৃত শ্রেষ্ঠ সুখি মানুষের হাসি হাসতে পারে?পারি না কেন,চেষ্টা করলে অবশ্যই সবাই এরকম কাজ করতে পারি।কি বলেন আপনারা?
ভাবতে লাগলাম ছেলে বাবাকে টাকা দিবে তো ভালো কথা কিন্তু কেন এই লুকোচুরি?বাড়ীতেই গিয়েত টাকাটা দিতে পারতো?কল্পনা করলাম,বাড়ীতে টাকা দিলেত তার মা দেখত এতে মা তার বাবাকে নিতে বারন করতে পারে বা মায়ের সামনে বাবা টাকা নিতে লজ্জাবোধ করত।হয়ত মায়ের সামনে ছেলের কাছে বাবা টাকা নিতে অপমানিত বোধ করত।হয়ত ছেলের বউ কোন ভাবে জানতে পারলে ছেলেকে অনেক বকা ঝকা করত বা ছেলের পরিবারে এই নিয়ে ঝগড়া বাধতে পারে। এরকম আরও কতো কিযে মাথায় ঘোর

1 মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
নবীনতর পূর্বতন